আব্দুল্লাহ আল নাঈম, ঢাকা: ঢাকার ধামরাই উপজেলার আলহাজ্ব জামাল উদ্দিন আদর্শ উচ্চবিদ্যালয়ের পাশে অবস্থিত তিনটি চালের কল। সেখান থেকে কলের কালো ধোঁয়া ও ছাঁই নিঃসৃত হয়ে শ্রেণীকক্ষে ডুকে পড়ে বিদ্যালয়ের কোমলমতি শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা, চোখের রোগ, শ্বাসকষ্ট, রক্তে কার্বোক্সি হিমোগ্লোবিন, চর্মরোগ ও স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিপরীত নানা রোগের আশঙ্কা করছেন বিদ্যালয়টির কর্তৃপক্ষ।
ধামরাই উপজেলার ভাড়ারিয়া ইউনিয়নের হাটিপাড়া এলাকায় গেল মঙ্গলবার শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসীর আয়োজনে চালের কলগুলো অন্যত্র সরিয়ে নেয়া অথবা কলগুলো বন্ধের জন্য একটি মানববন্ধন এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট স্বারকলিপিও প্রদান করেছেন বিদ্যালয়টির কর্তৃপক্ষ। একই ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন আশপাশের স্থানীয় বাসিন্দারা। বিদ্যালয় ও স্থানীয় সচেতন বাসিন্দাদের পক্ষ থেকে বারবার সতর্ক করা সত্ত্বেও কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি কলের মালিকপক্ষ। এর প্রতিবাদে কলগুলোকে অন্যত্র স্থানান্তর করতে হবে, নয়তো বন্ধ করে শিক্ষা ও বসবাসের উপযোগী পরিবেশ তৈরি করার ব্যাপারেও ভ্রুক্ষেপহীন মালিকপক্ষ।
উপজেলার ভাড়ারিয়া ইউনিয়নের হাটিপাড়া এলাকায় ওই বিদ্যালয়টির আশপাশের চালের কলগুলোর মধ্যে রয়েছে সামা অটো রাইসমিল, আরিয়ান ইন্টারন্যাশনাল অটো রাইসমিল ও সাহেব আলী অটো রাইসমিল। এই চালের কলগুলো থেকে ব্যাপকভাবে দূষণ ছড়িয়ে পড়ছে বিদ্যালয়সহ আশপাশের স্থানীয় এলাকায়।
বিদ্যালয় সূত্র জানিয়েছে, বিদ্যালয়ের কাছেই তিনটি চালের মিলের কালো ধোঁয়া ও ছাঁইয়ের কারণে ক্লাস করতে পারছেন না শিক্ষার্থীরা। তাঁরা প্রতিনিয়ত শ্বাসকষ্টসহ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। উড়ে আসা ছাঁইয়ে তাঁদের জামা-কাপড় নষ্ট হয়ে যায়, যা একদিনের বেশি পড়া যায় না। উড়ন্ত ছাঁই-ধুলার কারণে দুপুরে বিদ্যালয়ে বসে খাবার (টিফিন) খেতে পারে না শিক্ষার্থী।
বিদ্যালয়টির শিক্ষার্থীদের অভিভাবকেরা জানিয়েছেন, চালের কলের কালো ধোঁয়া, ছাঁই ও সেখান থেকে নির্গত ধোঁয়ায় বিদ্যালয় ছাড়াও আশাপাশের কৃষি জমি এবং পরিবেশ ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তাঁদের সংরক্ষণের কলগুলো অবিলম্বে বন্ধের দাবি জানিয়ে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ প্রত্যাশা করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
এ বিষয়ে উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মামনুন আহমেদ অনিক বলেছেন, ‘আলহাজ্ব জামাল উদ্দিন আদর্শ উচ্চবিদ্যালয়ে অটো চালের কলের কালো ধোঁয়া ও ছাঁইয়ে স্কুলের শিক্ষার্থীরা ক্লাস করতে পারছে না বলে আমার কাছে একটা স্বারকলিপি দিয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে, যাতে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার কোন সমস্যা না হয়।’
ভাড়ারিয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক চেয়ারম্যান মো. সুলতান আহমেদ, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আখতার হোসেন, স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য আবুল হোসেন ও বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এর প্রতিবাদে মানববন্ধনে বক্তব্য প্রদান করেছেন।
/এমএ