এম এস খালিদ, বাগেরহাট প্রতিনিধি: সদ্য শেষ হওয়া দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে বাগেরহাটের চারটি আসনে জাতীয় পার্টি, স্বতন্ত্রসহ ছোট ছোট রাজনৈতক দলের ২১ জন প্রার্থী জামানত হারিয়েছেন। আসনে পড়া মোট ভোটের আট ভাগের এক ভাগ ভোট না পাওয়ায় তাদের জামানত বাজেয়াপ্ত হয়। যে ২১ জন জামানত হারিয়েছেন তাদের মধ্যে বাগেরহাট-১ আসনে পাঁচ জন, বাগেরহাট-২ আসনে পাঁচ জন, বাগেরহাট-৩ আসনে পাঁচ জন এবং বাগেরহাট-৪ আসনে ছয় জন রয়েছেন।
স্থানীয় সচেতন নাগরিকরা বলছেন এবারের নির্বাচনে অংশ নেয়া অধিকাংশ প্রার্থীদের ভোটাররা চিনেন না। যার কারণে তারা ভোট পায়নি জামানত হারিয়েছেন।
বাগেরহাট-১ আসনে মো. কামরুজ্জামান লাঙল প্রতীকে পেয়েছেন পাঁচ হাজার ২১০ ভোট, এইচ এম আতাউর রহমান আতিকী ডাবে পেয়েছেন এক হাজার ১৭৫, বাসুদেব গুহ (আম) দুই হাজার ৬৫, মো. মঞ্জুর হোসেন শিকদার (নোঙ্গর) দুই হাজার ৭৯৬, মো. মাহফুজুর রহমান (সোনালী আঁশ) এক হাজার ৭৮৫ ভোট পেয়েছেন। এই আসনে মোট ভোট পড়েছে দুই লাখ ৩৮ হাজার ৬৯৩।
বাগেরহাট-২ আসনটিতে হাজরা শহীদুল ইসলাম (লাঙল) চার হাজার ১৭৪ ভোট, এস এম আজমল হোসেন (ঈগল) এক হাজার ৪৫৫, খাঁন আরিফুর রহমান (গোলাপ ফুল) তিন হাজার ১৬৩ ভোট, মরিয়ম সুলতানা (সোনালী আঁশ) দুই হাজার ৭৬২ ভোট, সোলায়মান শিকদার (নোঙ্গর) এক হাজার ৯০৭ ভোট পেয়েছেন। আসনটিতে ভোট পড়েছে দুই লাখ পাঁচ হাজার ৮৭২।
বাগেরহাট-৩ আসনে মফিজুল ইসলাম গাজী (ডাব) পেয়েছেন ২০৮ ভোট, ম্যানুয়েল সরকার (সোনালী আঁশ) ২২৮ ভোট, মো. মনিরুজ্জামান মনি (লাঙল) ৬৭০ ভোট, শেখ নুরুজ্জামান মাসুম (মশাল) ৩৩৮ ভোট, সুব্রত মন্ডল (নোঙ্গর) ৪২৩ ভোট পেয়েছেন। এই আসনে ভোট পড়েছে এক লাখ ৪৭ হাজার ৯৩০।
বাগেরহাট-৪ আসনে মো. জামিল হোসাইন (ঈগল) পাঁচ হাজার ৩৭৬ ভোট, মুহাম্মদ বদরুজ্জামান (ছড়ি) ৯৯২, মোহাম্মদ লোকমান (আম) এক হাজার ৬১১, মো. রেজাউল ইসলাম রাজু (নোঙ্গর) ৬৩৬, লুৎফুন নাহার রিক্তা (সোনালী আঁশ) ৬০৭ এবং সাজন কুমার মিস্ত্রী (লাঙল) পেয়েছেন দুই হাজার ২২০ ভোট। এই আসনে সর্বমোট ভোট পড়েছে দুই লাখ ১৪ হাজার ৭৬৭।
বাগেরহাট জেলা প্রশাসক ও রিটানিং কর্মকর্তা মোহা. খালিদ হোসেন বলেন, নির্বাচনে অংশ নেওয়া প্রত্যেক প্রার্থী ট্রেজারী চালানের মাধ্যমে সরকারি কোড নম্বরে রিটানিং কর্মকর্তা বরাবর ২০ হাজার টাকা করে জামানত জমা দেন। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীকে মোট সর্বমোট প্রদত্ত ভোটের আট ভাগের এক ভাগ পেতে হবে। নির্বাচন কমিশনের আইন অনুযায়ি নির্বাচনে অংশ নেয়া প্রার্থী তা না পেলে তার সরকারের কোষাগারে জমা দেয়া জামানতের টাকা বাজেয়াপ্ত বলে গন্য হবে। অর্থ্যাৎ কোন প্রার্থীই টাকা ফেরত নিতে পারবেন না। বাগেরহাটের চারটি আসনে অংশ নেয়া বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও স্বতন্ত্র মিলিয়ে ২১ জন প্রার্থী তাদের জামানত হারিয়েছেন।
বাগেরহাট সচেতন নাগরিক কমিটির সাবেক সভাপতি অধ্যাপক চৌধূরী আব্দুর রব জানান, বাগেরহাটের চারটি আসনের নির্বাচনে অংশ নেয়া আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি ছাড়া অধিকাংশ রাজনৈতিক দলের প্রার্থীদের এলাকার ভোটাররা চিনে না। অনেকে এলাকায় থাকেননা। গত পাঁচ বছরে সাধারণ ভোটাদের কাছে কোন দিন এসেছেন তাও শুনিনি। দলগুলো তাদের কেন্দ্র থেকে মনোনয়ন দিয়েছে আর ভোটে দাঁড়িয়ে গেছেন। সাধারণ মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য প্রার্থী নির্বাচন না করে ভোটযুদ্ধে অংশ নিয়ে এরা জামানত হারাবেন এটাই স্বাভাবিক। ভবিষ্যতে প্রার্থী নির্বাচনে দল ভালভাবে যাচাই বাছাই করে প্রার্থী দিবে সেই আহ্বান এই বিশিষ্ট্য নাগরিকের
এস আই আর