জেলা প্রতিনিধি, নওগাঁ: নওগাঁর ধামইরহাটে ব্যাপক বনায়ন কাজ সম্পন্ন করেছেন বনবিট কর্মকর্তা আনিসুর রহমান। তার যোগদানের পর থেকে ধামইরহাট ও পত্নীতলা উপজেলার কিছু ইউনিয়নে আমূল পরিবর্তন এসেছে। বিশেষ করে পত্নীতলা উপজেলার আমাইর ইউনিয়নের সিধাতৈল মৌজায় তিনি উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জন করেছেন।এই মৌজার কিছু অংশের জমি চৈত্র মাসে ফেটে চৌচির হয়, যেখানে ফসল চাষে কৃষকরাও বেসামাল হয়ে যান। কিন্তু সেখানে বৃক্ষ চারা রোপণ করে অসাধ্য সাধন করেছেন আনিসুর রহমান।
২০২১-২২ সালে সিধাতৈল মৌজার চৌচির মাঠে বৃক্ষ চারা রোপণ করে নজির সৃষ্টি করেছেন তিনি। বর্তমানে এই বৃক্ষ চারার উচ্চতা ১৫ থেকে ২০ ফুট, কোথাও কোথাও আরো বেশি। কিছু কিছু চারা অবিশ্বাস্যরকম মোটা হয়ে গেছে।বরেন্দ্র অঞ্চলের পরিবেশ সুরক্ষা প্রকল্পের আওতায় ৩০ হেক্টরের অংশে বনায়ন সৃজন এবং ১০০ জন স্থানীয় উপকারভোগীর সঙ্গে বন বিভাগ চুক্তিবদ্ধ হয়েছে।
১০ বছর মেয়াদী এই বনায়নের মেয়াদ শেষে বিধি মোতাবেক গাছ কর্তন শেষে উপকারভোগীরা পাবেন তাদের লভ্যাংশের অর্থ। এই বনায়নের ফলে পতিত জমি যেমন সাধারণের জবরদখল থেকে মুক্ত থাকবে, তেমনি পরিবেশের ভারসাম্যও রক্ষা পাবে এবং উপকারভোগীরা পাবেন মোটা অঙ্কের আর্থিক লভ্যাংশ, যা দিয়ে তারা তাদের জীবিকা নির্বাহ ও সংসারের উন্নয়নে কাজে লাগাতে পারবেন।
সাবেক ইউপি সদস্য ও একজন উপকারভোগী আব্দুর রহমান বলেন, “যেখানে বনায়ন করা হয়েছে, সেখানে বর্ষাকালে ৮ থেকে ১০ ফুট পানি থাকে এবং খরা মৌসুমে মাটি ফেটে চৌচির হয়ে থাকে। গাছ রোপণের ফলে পরিবেশের ব্যাপক উপকার হয়েছে। উপকারভোগীরা গাছ বিক্রি থেকে টাকা পেলে নিজেদের ভাগ্য উন্নয়ন করতে পারবে এবং এই জায়গাটি পতিত পড়ে থাকলে বে-দখল হওয়ার সম্ভাবনা ছিল। যা বনবিট কর্মকর্তা আনিসুর রহমান উদ্ধার করে বন বাগান সৃজন করে নজির সৃষ্টি করেছেন। চৌচির এই জমিতে গাছ রোপণের ফলে সরকারের লক্ষ্যমাত্রাও অর্জন হচ্ছে।”
এলাকাবাসীর মতে, বনবিট কর্মকর্তা আনিসুর রহমান একজন দক্ষ অফিসার, তাকে জাতীয়ভাবে পুরস্কৃত করা উচিত। রোপিত এই চারা গাছে পরিণত করতে বনবিট কর্মকর্তাকে ব্যাপক পরিশ্রম করতে হয়েছে। একদিকে অতিরিক্ত পানিতে তলিয়ে যাওয়ার ঝুঁকি, আরেকদিকে প্রচণ্ড খরায় গাছ মরার ঝুঁকি। স্থানীয়ভাবে পুরো খরা মৌসুমে পানি সেচের ব্যবস্থা করে গাছের শারীরিক বৃদ্ধিতে নিজের প্রচুর পরিশ্রম করেছেন আনিসুর রহমান।
বনায়ন সৃজন সম্পর্কে রাজশাহী বিভাগীয় বন কর্মকর্তা রফিকুজ্জামান শাহ বলেন, “রাজশাহী বিভাগে বন বিভাগের সরকারি জায়গা অত্যন্ত কম, তাই আমরা সড়ক ও জনপথ, পানি উন্নয়ন বোর্ডের বিভিন্ন দপ্তরের জায়গায় বিধি মোতাবেক বনায়ন করে উপকারভোগী সৃজন করি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় গাছ রোপণে একদিকে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা হয়, পাশাপাশি সামাজিক বনায়নে উপকারভোগী মনোনীত করার ফলে নির্দিষ্ট সময়ে গাছ কর্তনের লভ্যাংশ পাওয়ায় উপকারভোগীদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে ব্যাপক কাজে লাগে।”
মো: এ কে নোমান/এস আই আর