বৃহস্পতিবার, মে ৯, ২০২৪
spot_img

ধামইরহাটে এবার দ্বিগুণ সরিষার আবাদ, ফুটেছে কৃষকের মুখে হাঁসি

মোঃ এ কে নোমান, নওগাঁ: নওগাঁর ধামইরহাটে কৃষকের রঙিন স্বপ্ন দোলা দিচ্ছে সরিষার ফুলের বাতাসে৷ দেখে মনে হবে হলুদ রঙের শাড়ি পরে যেন কোন বিয়ের হলুদ সন্ধ্যা চলছে। ধামইরহাট উপজেলার বিভিন্ন এলাকার ফসলের মাঠে এমনই চিত্র দেখা যাচ্ছে অহরহ৷

উপজেলার পৌরসভার বিভিন্ন এলাকায় সরিষার হলদে ফুলের ফসলে মাঠের পর মাঠ ছেঁয়ে গেছে। মাঠের দিকে তাকালে দিগন্তজুড়ে যেন হলুদ গালিচা বিছানো হয়েছে। চলতি মৌসুমে সরিষা চাষের নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা এবারও ছাড়িয়ে যাচ্ছে। গত বছরে প্রায় ২৯৮০ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষাবাদ হয়েছে এবার ৫৪২০ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষ হয়েছে। কম খরচে অধিক লাভ, তাই সরিষা চাষের প্রতি আগ্রহী হচ্ছেন কৃষকরা।

সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, ধামইরহাট পৌরসভা এলাকার ফার্শিপাড়া ঈদ্গাহ মাঠ সংলগ্ন জমির ও আগ্রাদ্বিগুণ ইউনিয়নের কুমড়ইল (বেড়াআরা) এলাকার বিভিন্ন মাঠের দিকে তাকালে মনে হয় ফসলের মাঠ যেন সেজেছে গাঁয়ে হলুদের সাজে। মাঠজুড়ে সরিষা ফুল দেখে মনে হবে এ যেন হলুদ রাজার দেশ৷ মৌমাছির মধু সংগ্রহের গুঞ্জনে মুখরিত অবারিত ফসলের মাঠ। সরিষার ফুলে বাতাসের দোলায় দোল খাচ্ছে কৃষকের রঙিন স্বপ্ন। সরিষা চাষে লাভের স্বপ্ন দেখছেন কৃষকরা। সরিষা চাষে সময় লাগে কম, খরচও কম, লাভ বেশি হওয়ায় সরিষা উৎপাদনে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন এ অঞ্চলের কৃষকরা। এতে করে কৃষকরা লাভবানের পাশাপাশি দেশে তেলের ঘাটতি মিটানো সম্ভব হবে বলে জানিয়েছে উপজেলা কৃষি অফিস।

উপজেলার উমার ইউনিয়ন চকচন্ডি গ্রামের কৃষক শরিফুল ইসলাম বলেন, আমি এবারে প্রায় আড়াই বিঘা জমিতে সরিষা চাষাবাদ করেছি। প্রতি বিঘা জমিতে দুই হাজার টাকা করে ব্যয় হয়েছে। একই ইউনিয়নের বেলঘরিয়া গ্রামের আতোয়ার রহমান বলেন, প্রায় ৩.৫ বিঘা জমিতে সরিষা চাষাবাদ করেছি৷ সরিষার ক্ষেতে গেলে প্রাণটা ভরে যায়। পৌরসভার চকযদু গ্রামের কৃষক ফারুক হোসেন বলেন, আমি আমার সুবিধা ও সাধ্য মোতাবেক এবারে ১ বিঘার মতো জমিতে সরিষা চাষাবাদ করেছি। আশা করি গত বছরের ন্যায় এবার এর ভালো ফলন হবে।

তারা বলেন, আশা করছি ভালো ফলন হবে। এছাড়া বর্তমানে সয়াবিন তেলের দাম বেশি। তাই বিকল্প হিসেবে সরিষার তেল ব্যবহার করতে পারব। তা ছাড়া সয়াবিন তেলের চেয়ে সরিষার তেলের পুষ্টিগুণ অনেক বেশি।

উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা লাবনী খাতুন বলেন, তেল ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য আমরা কৃষকদের সরিষা চাষ করতে প্রণোদনা দিচ্ছি ও কৃষকদের লাভের জন্য দুই ফসলি থেকে তিন ফসলি জমি তৈরি করতে উৎসাহিত করছি। এই লক্ষ্য নিয়েই ভোজ্য তেল বৃদ্ধির জন্য আমরা কাজ করে যাচ্ছি৷ তিনি জানান, গত বছর আমার ব্লকে সরিষা ৮৫ হেক্টর হলেও এবারে ১৬৫ হেক্টর জমিতে প্রায় দ্বিগুন সরিষা উৎপাদন হয়েছে৷

উপজেলা কৃষি অফিসের সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে উপজেলার ১ টি পৌরসভা ও ৮ টি ইউনিয়নে পতিত জমিতে বাড়তি লাভের আশায় সরিষা চাষ করেন তারা। সরিষা কেটে ওই জমিতে আবার বোরো আবাদ করা যায়। এতে অল্প সময়ে একই জমিতে দুটি ফসলের চাষে লাভবান হওয়া যায়। জমিতে সরিষা রোপণ করা থেকে পরিপক্ব হতে সময় লাগে প্রায় দেড় থেকে দুই মাস। প্রতি বিঘা জমিতে সরিষা চাষে সব মিলিয়ে খরচ হয় আনুমানিক চার থেকে পাঁচ হাজার টাকা। এক বিঘা জমিতে সরিষা উৎপাদন হয় ৫-৮ মণ। সরিষার দামও ভালো পাওয়া যায়। তাই সরিষা বিক্রির টাকা দিয়ে ইরি বোরো চাষে খরচ করা যায় পাশাপাশি তাদের ভোজ্য তেলের চাহিদাও মিটানোও সম্ভব।

এস আই আর

- Advertisement -spot_img

রাজনীতি

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

আবেদন করতে ব্যানারে ক্লিক করুন...spot_img

সর্বশেষ সব খবর