ইবি প্রতিনিধি: কেন্দ্রে রুম নাম্বার বা হল খুঁজে দেওয়া, ডানে আর বামে বলতে বলতে জিহ্বা শুকানো, কেন্দ্রের আশেপাশের বিভিন্ন মোড়ে যানজট নিরসন, তীব্র গরমে সুপেয় পানির ব্যবস্থা করা, ক্যাম্পাসে শৃঙ্খলার সহিত প্রবেশ করানো, লাইন ধরে কেন্দ্রে প্রবেশ করানো এবং একটু দেরিতে আসা শিক্ষার্থীদের কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়ার তৎপরতা সহ বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী কাজের সার্ভিস দিয়ে যাচ্ছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় বিএনসিসি প্লাটুন ও রোভার স্কাউটস সদস্যরা।
শুক্রবার (৩রা মে) দেশব্যাপী চলমান গুচ্ছভুক্ত ভর্তি পরীক্ষা (বি ইউনিট) দিতে আসা শিক্ষার্থীদের তপ্ত গরমে দাঁড়িয়ে ‘ঠিক ডানে ঘুরে বামে যান’ বলে রোবটিক যন্ত্রের ন্যায় অকপটে সেবা দিচ্ছেন বিএনসিসির নিরব বিশ্বাস।
সরেজমিনে দেখা যায়, নিরব বিশ্বাস বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে (ভিতর সাইটে) ৪২ ডিগ্রি দাবদাহে দাঁড়িয়ে ঘর্মাক্ত শরীরে প্রবেশ করা ভর্তিচ্ছুদের কেন্দ্র দেখিয়ে দিচ্ছেন। একজন নবীন শিক্ষার্থী ক্যাম্পাসে পা রাখার সাথে সাথে সব নতুন। নিজস্ব মেধা শক্তি দিয়ে এক পাও সামনে এগোনো সম্ভব না। সেই মূহুর্তে সূর্যের কিরণ উপেক্ষা করে হাতের আঙুলের ইশারায় বলতে থাকেন এদিক, ওদিক, বাম আর ডানের কথা।
দাঁড়িয়ে দায়িত্ব পালনকারী নিরব বিশ্বাস বলেন, আমরা যারা বিএনসিসি করি তারা সারাবছর ভর্তি পরীক্ষার জন্য অপেক্ষা করি, এমনটা বলাই যায়। কেননা, আমাদের বিএনসিসির যে মূল মন্ত্র (জ্ঞান, শৃঙ্খলা ও স্বেচ্ছাসেবা) তার সঠিক ব্যবহার করতে পারি এই সময়টাতেই। সাথে নিজের প্রতি একটা বিশেষ অনুভূতি কাজ করা তো আছেই। কেননা, প্রাথমিকভাবে যাবতীয় শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণের দ্বিতীয় আমাদেরই থাকে। ভর্তি ইচ্ছুক পরীক্ষার্থীদের বিভিন্ন সম্বোধন (যেমন– স্যার, আঙ্কেল, ভাই) পাওয়াতেও একটা মজা আছে। সবশেষে যখন পরীক্ষার্থীরা আমাদের জন্য কিছুটা নিশ্চিন্ত বোধ করে বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে বা দ্বায়িত্বরত শিক্ষক-প্রশাসন আমাদের প্রশংসা করে আমাদের সুশৃঙ্খলতার জন্য তখন নিজেকে ও নিজের দ্বায়িত্বকে সার্থক মনে হয়।
তিনি আরও জানান, এখন আমি আমার নৌ প্লাটুনের সিনিয়র ক্যাডেট। র্যাংকে ক্যাডেট সার্জেন্ট। যে কারণে নির্দিষ্ট করে একটা দ্বায়িত্ব থাকে না। দ্বায়িত্ব পালনরত কোনো ক্যাডেট ঠিকমতো দ্বায়িত্ব পালন করছে কি না বা দ্বায়িত পালনকালে তাদের কোনো অসুবিধা হচ্ছে কি না, পরীক্ষার্থীদের যে কোনো সমস্যার প্রাথমিক সমাধান করা এরকম অনেক কিছুই করতে হয়।
চুয়াডাঙ্গা থেকে আসা আফরোজা নামক এক শিক্ষার্থীর কাছ থেকে জানতে চাইলে বলেন, ক্যাম্পাসে ঢোকার পর সব অন্ধকার মনে হয়। সামনে বিএনসিসির ড্রেসটাই চেনা চেনা লাগে। তাই ওনাদের কাছে গিয়ে সহায়তা নিই।
প্রসঙ্গত, গুচ্ছ পরীক্ষা উপলক্ষে ইবি শৃঙ্খলা উপ-কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক বিএনসিসি’র ৬০ জন এবং রোভার স্কাউটস ৫০ জন সদস্য ক্যাম্পাসে সার্বিক শৃংখলা রক্ষার্থে নিয়োজিত আছেন।