নোবিপ্রবি প্রতিনিধি: শিক্ষার্থীদের নানান হুমকি দিয়ে দমিয়ে রাখা সহ ১৬ অভিযোগে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) বায়োটেকনোলজি এন্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং (বিজিই) বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেনকে একাডেমিক এবং প্রশাসনিক সকল কার্যক্রম থেকে বিরত থাকতে আদেশ দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
মঙ্গলবার ১০ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ তামজিদ হোসাইন চৌধুরী (চলতি দায়িত্ব)
স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, শিক্ষার্থীদের লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিভাগের শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখার স্বার্থে আপনাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বিরত থাকার জন্য কর্তৃপক্ষের নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।
উল্লেখ্য, গত সোমবার ৯ সেপ্টেম্বর বিজিই বিভাগের সাধারণ শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বরাবর ১৬ টি অভিযোগসহ একটি অভিযোগপত্র জমা দেয়।
অভিযোগগুলো হল: শ্রেণিকক্ষে ও বিভিন্ন স্থানে অবমাননাকর ও অপমানজনক মন্তব্য; পর্দানশীল শিক্ষার্থীদেরকে হয়রানি; নিজ চেম্বারে একা থাকলে মেয়েদেরকে ডেকে নিয়ে যাওয়া; জোর-জবরদস্তি পূর্বক অযাচিত স্পর্শ করা; শ্রেণিকক্ষে অশ্লীল ও অপ্রাসঙ্গিক আলোচনা; প্রেজেন্টেশন, পরীক্ষা, এমনকি ক্লাসে পোশাক পরিচ্ছদ, সাজগোজ ইত্যাদি নিয়ে কটাক্ষ করা ও চাপ প্রয়োগ; মনগড়া অভিযোগ এবং ভীতি প্রদর্শন; খাদ্য সম্পর্কিত হয়রানি ও অযাচিত আবদার; অযৌক্তিক কর্মকাণ্ড; শিক্ষক হিসেবে মর্যাদা লঙ্ঘন; নিজ চেম্বারে শিক্ষার্থীদের সাথে অযাচিত কথাবার্তা; ভাইবার সময় অপ্রাসঙ্গিক কথা; উপজাতি মেয়েদেরকে বিশেষভাবে হেয় প্রতিপন্ন করা; শিক্ষাদানে অনিহা; ফাইনাল ট্রীপ নিয়ে আলোচনায় অপ্রাসঙ্গিক কথা বলা বলা; প্রশাসনিকভাবে হুমকি-ধামকি, প্রতিশোধপরায়ণ মনোভাব এবং শিক্ষার্থীদের ট্রমা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিজিই বিভাগের একজন শিক্ষার্থী বলেন, এতদিন স্যারের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ গুলো স্টুডেন্টরা দিতে ভয় পেতো। তার অন্যতম কারন স্যার নিজে ক্লাসে নানা ভাবে হুমকি দিতো যে, যদি কেউ ওনার নামে পোস্ট করে বা অভিযোগ দেয় তাহলে কিছু যায় আসে না। কারণ যারা তদন্ত করবে তারা তারই লোক। যার অন্যতম উদাহরণ আমাদের ব্যাচের এক সিনিয়র আপুকে স্যারের বিরুদ্ধে অভিযোগ করার কারনে অনেক আগেই মার্ক টেম্পারিং সহ নানা হেনস্তার স্বীকার হতে হয়েছে। তাই প্রশাসনিক পরিবর্তন ঘটার পর এমন স্বাধীন বাংলাদেশ এ নতুন ভিসি স্যারের পক্ষ হতে এই বিষয় স্পষ্ট আশ্বাস পাওয়ায় শিক্ষার্থীরা সবাই এখন অভিযোগ জমা দিতে সাহস করেন।
অভিযুক্ত শিক্ষক ড. আনোয়ার হোসেনকে এ বিষয়ে মুঠোফোনে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, আমি যে অভিযুক্ত হবো এটা আমি কখনো ভাবি নাই। আমি বিভাগে সবসময় ওদের বলতাম তোমরা কারো সাথে বেয়াদবি করবে না কখনো। পরীক্ষায় নকল করা নিয়ে আমি খুব সিরিয়াস থাকতাম। কিছু কিছু সময় আমি কটুকটু কথা বলতাম। কিন্তু তা অভিযোগের সুরে আসবে তা কখনো ভাবিনি। যেহেতু অভিযোগ দিয়েছে, প্রশাসন তা তদন্ত করে বের করুক।
সাজিদ খান/এস আই আর