জাবি প্রতিনিধি: সম্প্রতি বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় ও ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ পদে যথাক্রমে অবসরপ্রাপ্ত কর্ণেল আবু হেনা মোস্তফা কামাল খান ও অবসরপ্রাপ্ত যুগ্মসচিব এ. এস. এম. মামুনুর রহমান খলিলীকে নিয়োগ প্রদান করায় তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরামের নেতৃবৃন্দ।
গতকাল (২৯ নভেম্বর) একটি প্রেস রিলিজে জাবির জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরামের নেতৃবৃন্দ বলেন, “আমরা অত্যন্ত বিস্ময়ের সাথে লক্ষ করেছি-শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের জারি করা দুটি পরিপত্রে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ পদে জনাব আবু হেনা মোস্তফা কামাল খান (অবসরপ্রাপ্ত কর্ণেল) ও ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ পদে জনাব এ. এস. এম. মামুনুর রহমান খলিলী (অবসরপ্রাপ্ত যুগ্মসচিব) কে নিয়োগ প্রদান করা হয়। প্রতিরক্ষা ও সরকারি দাপ্তরিক কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করা দু’জন অবসরপ্রাপ্ত ব্যক্তিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণায় নেতৃত্বদানকরী কর্তৃপক্ষ হিসেবে নিয়োগ প্রদানের মাধ্যমে পুরো উচ্চশিক্ষা ব্যবস্থাকে প্রশ্নবিদ্ধ করা হয়েছে বলে আমরা মনে করি। এ ধরনের অনুপযুক্ত নিয়োগের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য মহামান্য রাষ্ট্রপতির সম্মানও মারাত্মকভাবে ক্ষুণ্ন হয়েছে বলে আমরা অনুভব করছি। একজন সেনা বা সরকারি কর্মকর্তা তাঁর পদ সংশ্লিষ্ট কাজের অভিজ্ঞতা দিয়ে শিক্ষা ও গবেষণার গুরুত্ব যথাযথভাবে অনুধাবন করতে পারবেন বলে আমরা মনে করি না। অথচ দক্ষ মানবসম্পদ তৈরি ও জ্ঞান-বিজ্ঞানের উন্নয়নে বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের শিক্ষা ও গবেষণার গুরুত্ব অপরিসীম।
এজন্য ঐতিহ্যগতভাবে বিশ্বের প্রায় প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়েই প্রশাসনিক দায়িত্বে স্ব-স্ব ক্ষেত্রে সফল গবেষক ও শিক্ষক অধ্যাপকগণকে নিয়োগ দেয়া হয়ে থাকে।
আমরা বিশ্বাস করি যে, মন্ত্রণালয়ের কর্তৃত্বে না থেকে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি) যদি মহামান্য রাষ্ট্রপতির অনুমোদনক্রমে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিভিন্ন প্রশাসনিক পদে নিয়োগ দিত তাহলে এই ধরনের বিব্রতকর পরিস্থিতি এড়ানো যেত। অনতিবিলম্বে এই আদেশগুলো বাতিল করে স্বনামধন্য গবেষক অধ্যাপকগণকে উক্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর কোষাধ্যক্ষ পদে নিয়োগের দাবি জানাচ্ছি। না হলে এই নিয়োগ দেশের উচ্চশিক্ষা ব্যবস্থার অধঃপতনের মাইলফলক হিসেবে কাজ করবে বলে আমরা আশঙ্কা করছি।
‘জুলাই গণহত্যা’ পরবর্তী নতুন বাংলাদেশ গঠনে সংকীর্ণ গোষ্ঠী স্বার্থের ঊর্ধ্বে উঠে সংশ্লিষ্ট সবাইকে কাজ করার আহ্বান জানাই। দেশ-মাতৃকার মুক্তির এই আন্দোলনে আহত বিপ্লবী-জনতার আশু সুস্থতা কামনা করছি ও শহীদদের আত্মার মাগফেরাত কামনার পাশাপাশি শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি। শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত এই বাংলাদেশ ভালো থাকুক। বাংলাদেশ জিন্দাবাদ।”
উক্ত নিন্দা ও ক্ষোভ পত্রের পক্ষে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরামের ৫০ জন অধ্যাপক ও ৯ জন শিক্ষক স্বাক্ষর করেন।
মোঃ আরিফ হোসেন/এমএ