শনিবার, এপ্রিল ২৭, ২০২৪
spot_img

গুরুদাসপুরে অভিযোগ তুলে নিতে গণধর্ষণের শিকার নারীকে ভয়ভিতি

গুরুদাসপুর (নাটোর) প্রতিনিধি: নাটোরের গুরুদাসপুরে বেসরকারি ইনস্যুরেন্স কোম্পানির কর্মী সংবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হওয়া নারীকে (৩২) অভিযোগ তুলে নিতে ভয়ভিতি দেখানোর অভিযোগ উঠেছে ধর্ষকদের বিরুদ্ধে। অভিযোগ তুলে না নিলে অশ্লীল ছবি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকিও দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী ওই নারী।

ভুক্তভোগি নারী চাটমোহর উপজেলার একটি গ্রামের বাসিন্দা। পেশায় ইন্স্যুরেন্সকর্মী। ওই নারী জানান- ২০২৩ সালের ১৯ অক্টোবর গুরুদাসপুরে ইন্স্যুরেন্সের কাজে এসেছিলেন তিনি। ওই দিন দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে চাটমোহর উপজেলার ছাইকোলা গ্রামের কামরুজ্জামান সোনা তাকে ইন্স্যুরেন্স খোলার জন্য গুরুদাসপুর বাসস্ট্যান্ডের অদূরে একটি তিনতলা ফ্লাটে নিয়ে যান। সেখানে আগে থেকেই আরো দুই যুবক উপস্থিত ছিলেন। তাকে ওই ফ্লাটের দ্বিতীয় তলায় নিয়ে প্রথমে জোরপূর্বক ধর্ষণ করেন কামরুজ্জামান সোনা (৬৭)। এরপর সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে বিবস্ত্র করে মোবাইল ফোনে ছবি তুলেন আবুল কালাম আজাদ নামের এক যুবক। এসময় অন্য কক্ষে নিয়ে তিনিও ধর্ষণ করেন। পরে ফিরোজ আহম্মেদ নামের আরেক যুবক নেশাগ্রস্ত অবস্থায় ধর্ষণ করেন। একপর্যায়ে ফিরোজ পায়ুপথে বিকৃত সঙ্গম করলে তিনি জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন।

তিনি আরোও বলেন- ঘটনার বিচার চেয়ে সম্প্রতি তিনি গুরুদাসপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। এখন ওই অভিযোগ তুলে নিতে ভয়ভিতি দেখাচ্ছেন ধর্ষক রনি আহম্মেদ ও ফিরোজ আহম্মেদ। থানায় অভিযোগ দায়ের করে তিনি নিরাপত্তাহীনতায় পড়েছেন। তিনি প্রশাসনের হস্তক্ষেপ দাবি করেন।

থানায় দায়ের করা অভিযোগে জানাযায়- ফিরোজ আজম্মেদ নামের এক যুবক ওই নারীর সাথে বিকৃত যৌনাচার করায় তিনি অজ্ঞান হয়ে পড়েন। পরে জ্ঞান ফিরে এলে আবারো তাকে ধর্ষণ করেন আবুল কালাম আজাদ। এতে তিনি গুরুত্বর অসুস্থ্য হয়ে পড়েন। এসময় অভিযুক্তরা কামরুজ্জামান সোনাকে মারধর করে বিকাশের মাধ্যমে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা চাঁদা আদায় করেন। পরে রাত ৮টার দিকে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়। ইন্টারনেটে ছবি ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখানোয় ওই সময় অভিযোগ করতে পারেননি ওই নারী।

খোঁজ নিয়ে জানাযায়- গণধর্ষণের শিকার ওই নারীর বাড়ি পাবনার চাটমোহর উপজেলায়। একই উপজেলার ছাইকোলা এলাকার বাসিন্দা কামরুজ্জামান সোনা। এই ব্যক্তি অবসর প্রাপ্ত সরকারি চাকুরিজীবি। গুরুদাসপুরেও চাকুরি করেছেন। সেই সুবাদে অভিযুক্ত ফিরোজ আহম্মেদের সাথে পরিচয়। ফিরোজ গুরুদাসপুর পৌর সদরের বাসস্ট্রান্ড এলাকার মৃত তোফায়েল আহম্মেদের ছেলে। ফিরোজের এক সহযোগী আবুল কালাম আজাদ গুরুদাসপুরের সরকারি বঙ্গবন্ধু বিজ্ঞাণ ও প্রযুক্তি কলেজের প্রভাষক। তিনি উপজেলার রওশনপুর এলাকার বাসিন্দা। ভাড়া থাকেন গুরুদাসপুর পৌর সদরের বাসস্ট্রান্ড এলাকায়। অপর সহযোগী রনি আহম্মেদ চাটমোহর উপজেলার ছাইকোলা এলাকার বাসিন্দা। তিনিও দীর্ঘদিন ধরে গুরুদাসপুর বাজার এলাকায় পরিবার নিয়ে ভাড়া থাকেন।

গণধর্ষণের বিষয়ে অভিযুক্ত কামরুজ্জামান সোনা সাংবাদিকদের সাথে কথা বলতে রাজি হননি। এছাড়া অপর তিন অভিযুক্তের মধ্যে ফিরোজ আহম্মেদ ও রনি আহম্মেদ সংবদ্ধ ধর্ষণের কথা স্বীকার করেছেন। তবে ভয়ভিতি দেখানোর অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

গুরুদাসপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ উজ্জল হোসেন বলেন- বিষয়টি নিয়ে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

- Advertisement -spot_img

রাজনীতি

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

আবেদন করতে ব্যানারে ক্লিক করুন...spot_img

সর্বশেষ সব খবর