বাড্ডা থানার আওতাভুক্ত আফতাব নগরবাসীরা গুঁড়াকৃমিতে আক্রান্ত। সে যে বয়সের হোক না কেন তারা গুঁড়াকৃমির আক্রমণ থেকে রেহাই পায়নি। সে ব্যক্তি কী শিশু, কী বৃদ্ধ, কী যুবক সবাই গুঁড়াকৃমির যন্ত্রণাতে সুস্থ জীবনযাবন করতে পারছে না। গুঁড়াকৃমির বিরক্তিতে অধিকাংশ আফতাবনগরবাসী অতিষ্ঠ। দিন কী রাত সব সময়ে এরা বিরক্ত করে। বিশেষকরে সন্ধ্যার পর পর এরা বিরক্তির পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়। এদের বিরক্তির পরিমাণ এতটাই প্রকট যে আফতাবনগরের অনেকেই রাস্তা-ঘাটেই পশ্চাতদেশ চুলকাতে থাকে। এলাকার মেডিসিনের দোকানগুলোতে সবচেয়ে বিক্রি হয় গুঁড়াকৃমিনাশক মেডিসিন।
শিশুদের কষ্ট সবচেয়ে বেশি। গুঁড়াকৃমির কারণে শিশুরা রাতে বিছানা ভেজায়। গুঁড়াকৃমি পায়ুপথে আক্রমণ করে মলদ্বার ও প্রস্রাবের স্নায়ুকে দুর্বল করে। ফলে ঘুমন্ত অবস্থায় শিশুদের মূত্রথলিতে প্রস্রাবের চাপ পড়লেই তা বিছানাতে ছেড়ে দেয়। তারা প্রস্রাব আটকাতে পারে না। এই ঘটনাকে আমরা শিশুদের বিছানা ভেজানো আচরণ বলে থাকি।
শিশুরা স্কুলেও যখন তখন এমন চুলকানিমূলক আচরণ করে যা দৃষ্টিকটু। অনেকেই অবগত আছেন যে গুঁড়াকৃমি শিশুর লেখাপড়াতে অমনোযোগী হতে সহায়তা করে। শিশুদের অমনোযোগিতার অন্যতম কারণ হলো গুঁড়া কৃমি। ভয়ংকর দিকটি হলো, পশ্চাদ্দেশ চুলকানোর ফলে কৃমির ডিম বা জীবাণু শিশুদের হাতে চলে আসে যা অন্য শিশুদের মাঝে সহজে সংক্রমণ করতে সহায়তা করে।
অনেক মেয়েরা ইউরিন ইনফেকশন মনে করে যোনিপথ চুলকায় এবং তারা ইউরিন ইনফেকশনের জন্য মেডিসিন খেয়ে কিডনির ১২টা বাজায়। মূলত- তারা গুঁড়াকৃমিতে আক্রান্ত। আক্রান্ত নারীর যোনিপথে গুঁড়াকৃমিরা অবস্থান করে। এধরনের চুলকানো অশোভন। অসহ্য। গাইনি ডাক্তাররা ভুল চিকিৎসা করান কৃমির বিষয়টি আমলে না এনে। ফলে শত শত মেয়েরা তাদের গাইনি জটিলতার ঝুঁকিতে রয়েছে।
আফতাবনগরের পানিতে কাদা বালির পরিমাণ বেশি। ঢাকার অন্য কোনো স্থানে পানির ফিলটার মাসে একবার পরিবর্তন করতে হলেও আফতাবনগরে প্রতি সপ্তাহে পানির ফিলটার পরিবর্তন করতে হয়। যারা পানি ফুটিয়ে নেন তারা হয়ত পানিকে জীবাণু মুক্ত করতে পারেন কিন্তু কাদা মুক্ত পারেন না। ভবিষ্যতে তাদের কিডনিতে সমস্যা হবে বলে অনেকে মনে করেন।
কেন আফতাবনগরে এত কৃমি আক্রমণ?
আপতাবনগরে গুঁড়াকৃমি সংক্রামিত হওয়ার অন্যতম কারণ হলো গরুর হাট। গরুর হাটে পানি সরবরাহ করার জন্য ওয়াসার পানির পাইপে হাজার হাজার ছিদ্র করা হয়। গরুর হাট শেষ হওয়ার পর এসব ছিদ্র সঠিকভাবে পূরণ করা হয় না। ফলে ওয়াশার পাইপ ফুটো থেকে যায়। পরে পানির চাপ কমে গেলে কাদা মাটিসহ বিভিন্ন প্রকার জীবাণু পানির পাইপে ঢুকে পরে। এসব পানির সংস্পর্শে আসার সঙ্গে সঙ্গে পানি ব্যবহারকারী আমাশয় ও গুঁড়া কৃমির জীবাণুতে আক্রান্ত হয়।
সংশ্লিষ্ট সরকারি-বেসরকারি সব কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন যে বিষয়টির প্রতি নজর দিয়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করে আফতাবনগরবাসীদের গুঁড়া কৃমি থেকে রক্ষা করা হোক।
কাজী মাহমুদুর রহমান : সদস্য, ভোরের সাথী শরীর চর্চা অঙ্গন; বাসা নং– ২৮, এফ ব্লক, আফতাবনগর, ঢাকা
[ প্রকাশিত লেখাটির ব্যাখ্যা বা বিশ্লেষণ, তথ্য-উপাত্ত, রাজনৈতিক, আইনগতসহ যাবতীয় বিষয়ের দায়ভার লেখকের, জনতার বার্তা কর্তৃপক্ষের নয়। ]