শনিবার, এপ্রিল ২৭, ২০২৪
spot_img

‘কিংস পার্টি’তে সাকিবের যোগদান নিয়ে যা বলছে দুই পক্ষ 

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানের জাতীয়তাবাদী আন্দোলন বা বিএনএমে যোগ দেওয়া সংক্রান্ত একটি খবর সামনে আসার পর রাজনৈতিক অঙ্গনে তুমুল আলোচনা চলছে।

প্রকাশিত সেই সংবাদের ছবিতে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর হাফিজ উদ্দিনের সঙ্গে সাকিবকে দেখা গেছে। তাদের হাতে একটি কাগজ ছিল। সেই ছবির ক্যাপশনে লেখা ছিল, ‘বিএনএমের ফরম পূরণ করে সাকিব এভাবেই তুলে দেন হাফিজের হাতে’।

বিএনএমের সদস্য হয়েও আওয়ামী লীগ কীভাবে সাকিবকে মাগুরা-১ আসন থেকে মনোনয়ন দিল সেটা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে। আবার বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর হাফিজ উদ্দিনও বিষয়টিকে মিথ্যা বলে দাবি করেছেন।

সাকিবের বিএনমে যোগদানের বিষয়ে জানা নেই : ওবায়দুল কাদের

আজ রাজধানীর ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকরা এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।

জবাবে তিনি বলেন, সাকিব আওয়ামী লীগের টিকিটে মাগুরা থেকে ইলেকশন (নির্বাচন) করেছে, জয় লাভ করেছে। পার্টির কাছে নমিনেশন (মনোনয়ন) চাওয়ার সময় সে পার্টির সদস্য। তার আগে তো সাকিব আমাদের পার্টির কেউ ছিল না। নমিনেশন যখন নেয় তখন তাকে তো প্রাইমারি সদস্য পদ নিতে হয়। সে শর্ত পূরণ করা দরকার সেটা সে করেছে। সেভাবেই আমরা মনোনয়ন দিয়েছি। সে এমপি হয়েছে নির্বাচনে। আমি এই বিষয়ে আর কিছু জানি না।

নির্বাচনের আগে সরকার কিংস পার্টি তৈরি করেছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সরকারি দল কিংস পার্টি করতে যাবে কেন? নির্বাচনকে সামনে রেখে রাজনীতিতে অনেক ফুল ফুটে। কোনটা কিংস পার্টি, কোনটা প্রজা পার্টি এটা সম্পর্কে আমার জানা নেই। এটার রেজিস্ট্রেশন করে স্বাধীন নির্বাচন কমিশন। কোন দল কে রিকগনিশন (প্রতিনিধিত্ব) করে এটা নির্বাচন কমিশনের বিষয়। এখানে আমাদের কিছু বলার নেই।

যা বললেন মেজর হাফিজ

অন্যদিকে সাকিব ইস্যুতে নিজের অবস্থান পরিষ্কার করেছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর হাফিজ উদ্দিন। বনানীর নিজ বাসভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, আমি সামান্য ব্যক্তি। ৩৭ বছর ধরে রাজনীতি করছি। দুইবার মন্ত্রী ও ৬ বার এমপি ছিলাম। ওইসব সংবাদে আমার ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার অপচেষ্টা লক্ষ্য করছি। দলের নেতাকর্মীরাও এতে বিচলিত হন।

সাকিব আল হাসানের সঙ্গে নিজের ছবির প্রসঙ্গ তুলে ধরে তিনি বলেন, এই ব্যাকগ্রাউন্ড হচ্ছে বাংলাদেশের রাজনীতি অত্যন্ত নোংরা। দেশে কোনো গণতন্ত্র নেই। এখানে নানা ধরনের কলাকৌশল করা হয়। যে দলই ক্ষমতায় থাকে তারা প্রতিপক্ষকে নানাভাবে নির্যাতন করে। সেখান থেকে কিছু লোক বাগিয়ে এনে নিজের দলে কিংবা অন্যদলে সন্নিবেশ করে নির্বাচনী বৈতরণী পার হতে চায়।

নিজের জীবন খোলা বইয়ের মতো বলে উল্লেখ করে বিএনপির এই নেতা বলেন, সেখানে এমন কিছু করিনি যে আমাকে লজ্জিত হতে হবে। আমি সামান্য হলেও আমার এলাকার মানুষ অনেক সম্মান করেছে। ৬ বার নির্বাচিত করেছে।

হাফিজ উদ্দিন বলেন, দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনের আগে নতুন দল গঠনের প্রস্তাব পেয়েছি। কিন্তু তা ফিরিয়ে দিয়েছি। ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানকে আমার কাছে নিয়ে আসা হয়েছিল। তবে আমি তাকে নতুন দলে যোগদানের বিষয়ে কোনো উৎসাহ দিইনি। সামরিক বাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত কয়েকজন পরিচিত কর্মকর্তা নতুন দল গঠনের পরামর্শ দিয়েছিলেন। তাদের বলেছি, রাজনীতিতে কোনো শর্টকাট নেই।

তিনি বলেন, সামরিক বাহিনীর তিন চারজন অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তার উদ্যোগে বিএনএম গঠিত হয়। তারাই সাকিব আল হাসানকে আমার কাছে নিয়ে আসেন। সাকিবও রাজনীতিতে যোগদানের ইচ্ছা ব্যক্ত করেন। আমি সাকিবকে বলেছিলাম, রাজনীতি করা আপনার বিষয়। এখনো খেলাধুলা করছেন, রাজনীতি করবে কি না বিবেচনা করে দেখেন। আমার কাছ থেকে উৎসাহ না পেয়ে সে চলে যান তিনি।

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের মাস ছয়েক আগে থেকেই সরকারি দল করা গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা যোগাযোগ শুরু করে জানিয়ে বিএনপির এই নেতা বলেন, তারা দেখেছে বিএনপির নীতিনির্ধারণী বিষয়ে আমার মাঝে মাঝে দ্বিমত থাকে। তারা ধরে রেখেছিল যে বিএনপি ত্যাগ করার জন্য আমি উন্মুখ। আমি তাদের বলেছিলাম, আমার পক্ষে ৩২ বছর পর দলত্যাগ করা সম্ভব নয়। আমি শারীরিকভাবে অসুস্থ। শিগগিরই রাজনীতি থেকে অবসর নেব।

সরকারি দলের চাপ বাড়তে থাকার মধ্যে একজন মন্ত্রী ঘোষণা দেন যে হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বিএনএমে যোগ দেবেন— বিষয়টি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘পরদিনই আমি সংবাদ সম্মেলন করে বলেছি, বিএনপিতেই থাকব।

- Advertisement -spot_img

রাজনীতি

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

আবেদন করতে ব্যানারে ক্লিক করুন...spot_img

সর্বশেষ সব খবর