সোমবার, এপ্রিল ২৯, ২০২৪
spot_img

সিলেটে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ‘ছাত্রলীগের তাণ্ডব’

সিলেটের জৈন্তাপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় চার ছাত্রলীগ নেতার মৃত্যুতে দুর্ঘটনার পর উত্তেজিত ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা জৈন্তাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভাঙচুর করেছেন। এ সময় একটি অ্যাম্বুলেন্স, হাসপাতালের আসবাবপত্র এবং জরুরি বিভাগের বিভিন্ন সরঞ্জাম ভাঙচুর করা হয়। এ ছাড়া কর্তব্যরত ডাক্তারকে মারধর ও হাসপাতালের গ্যারেজে থাকা একটি নতুন জিপ গাড়িও জ্বালিয়ে দেয় তারা।

এর আগে শুক্রবার (১৯ জানুয়ারি) রাত ১২টার দিকে সিলেট-তামাবিল মহাসড়কের ৪নং বাংলাবাজার রাংপানি এলাকায় প্রাইভেটকার নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে জেলা ছাত্রলীগের চার নেতা নিহত হন।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. সালাহ্উদ্দিন মিয়া বলেন, গতরাতে দুর্ঘটনার পর প্রথমে দুজনকে নিয়ে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে আসেন তারা। এ সময় জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক (ইএমও) হিল্লোল সাহা দুজনকেই মৃত বলে ঘোষণা করেন। এর কিছুক্ষণ পর আরও দুজনকে নিয়ে আসেন কয়েকজন। তবে এই দুজনও আগে থেকেই মৃত ছিলেন। তাই আমাদের প্রকৃত অর্থে কিছুই করার ছিল না।

তিনি আরও বলেন, নেতাকর্মীদের সামনেই আমরা ইসিজি করেও দেখিয়েছিলাম যে তাদের হাসপাতালে আনার আগেই মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু তারা সেটি মানতে রাজি নন। তারা আমাদের চিকিৎসকের গায়ে হাত তুলেছেন, জরুরি বিভাগসহ হাসপাতালে ভাঙচুর করেছেন। এমনকি আমাদের আবাসিক কমপ্লেক্সে দফায় দফায় হামলা চালিয়েছেন।

তিনি বলেন, পুলিশের সামনেই হামলা চালানো হয়েছে। তারা অন্তত দুই থেকে তিনশ লোক ছিলেন আর অল্প কয়েকজন পুলিশ, কিইবা করার আছে।

ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানতে চাইলে ডা. মো. সালাহ্উদ্দিন মিয়া বলেন, দুইটি গাড়ি গ্যারেজে ছিল। তারা গ্যারেজের তালা ভেঙে একটি অ্যাম্বুলেন্স ভাঙচুর করেছেন আর অপরটি সম্পূর্ণ জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া হাসপাতালের আসবাবপত্র ও জরুরি বিভাগের বিভিন্ন সরঞ্জাম ভাঙচুর করা হয়েছে। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরুপণ করে আমরা আইনগত ব্যবস্থা নেব।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভাঙচুর ও গাড়িতে অগ্নিসংযোগের বিষয়ে জৈন্তাপুর থানার ওসি তাজুল ইসলাম বলেন, আবেগের বশে নিহতের স্বজনরা এমনটি করেছেন। এ বিষয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অভিযোগ দিলে আমরা আইনানুগ ব্যবস্থা নেব।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভাঙচুর ও গাড়িতে অগ্নিসংযোগের বিষয়ে জৈন্তাপুর থানার ওসি তাজুল ইসলাম বলেন, আবেগের বশে নিহতের স্বজনরা এমনটি করেছেন। এ বিষয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অভিযোগ দিলে আমরা আইনানুগ ব্যবস্থা নেব।

তবে এ ঘটনার সঙ্গে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের জড়িত থাকার ব্যাপারটি অস্বীকার করেছেন জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি নাজমুল ইসলাম। তিনি বলেন, ঘটনার আকিস্মিকতায় স্থানীয়রা উত্তেজিত জনতা হাসপাতালে ভাঙচুর চালায়। পরে উপজেলা চেয়ারম্যানের মধ্যস্ততায় বিষয়টির সমাধান হয়। এখানে কোনোভাবেই ছাত্রলীগ জড়িত নয়।

এদিকে এ ঘটনায় বক্তব্য দিয়েছেন স্থানীয় সংসদ সদস্য ইমরান আহমদ। নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে ইমরান আহমদ বলেন, শুনেছি গতকাল রাতে তাদের চিকিৎসা নিয়ে জৈন্তাপুর উপজেলা হাসপাতালে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে। তদন্তপূর্বক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দায় থাকলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

শনিবার (২০ জানুয়ারি) দুপুর ২টায় জৈন্তাপুর রাজবাড়ি মাঠে হাজারো মানুষের উপস্থিতিতে মুসলিম ধর্মের ৩ জনের জানাজা সম্পন্ন হয়। পরে তাদের পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। আর হিন্দু ধর্মের ১ জনের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সম্পন্ন হয় তাদের পারিবারিক শ্মশানে।

এসএ

- Advertisement -spot_img

রাজনীতি

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

আবেদন করতে ব্যানারে ক্লিক করুন...spot_img

সর্বশেষ সব খবর