জেলা প্রতিনিধি, নওগাঁ: ধামইরহাটে কোরবানি পশুর চামড়ার বাজারে চরম অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। জানা গেছে, সরকারি নির্ধারিত দামের চেয়ে অনেক কম মূল্যে চামড়া কেনাবেচা হচ্ছে। এতে কোরবানি দাতা এবং চামড়া ব্যবসায়ীরা উভয়ই বিপাকে পড়েছেন।
প্রতি বছর ঈদুল আযহার পরপরই ধামইরহাটসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে কোরবানি পশুর চামড়ার ব্যবসা জমজমাট থাকে। কিন্তু এ বছর পরিস্থিতি ভিন্ন। বাজারে চামড়ার চাহিদা কমে গেছে এবং মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্ম্যে মূল্যের ব্যাপক পতন ঘটেছে।
একটি ছাগলের চামড়া যেখানে সরকার নির্ধারিত মূল্য ৩০০-৪০০ টাকা, সেখানে বাজারে তা বিক্রি হচ্ছে মাত্র ১০-২০ টাকায়। গরুর চামড়া যেখানে ৬০০-৮০০ টাকা হওয়া উচিত, সেখানে তা বিক্রি হচ্ছে মাত্র ৪৫০-৬০০ টাকায়। তবে ধরন ও সাইজ ভেদে কখনো কখনো গরুর চামড়া ৮০০ টাকা পর্যন্ত কিনছেন ব্যবসায়ীরা।
নওগাঁ থেকে আসা চামড়া ব্যবসায়ী রবি চন্দ্র বলেন, “সরকারি নির্ধারিত দামেই কেনার চেষ্টা করছি। তবে সরকারি দামের চেয়ে কিছুটা কম দামে চামড়া কিনতে হচ্ছে। মধ্যস্বত্বভোগীরা চামড়া কম দামে কিনে বেশি দামে বিক্রি করছে। এতে আমরা এবং খামারিরা উভয়ই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি।”
ধামরহাটের শল্পী নামক এলাকা থেকে আসা আরেক ব্যবসায়ী মো. স্বপন বলেন, “চামড়ার গুণগত মান ঠিক থাকলে বাজারে চাহিদা অনুযায়ী নানান দামে ক্রয় করছি। অনেক চামড়া প্রক্রিয়াজাতকরণ কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। এতে আমাদের ব্যবসায় ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। তবে চামড়ার দাম বাজারে না থাকায় আমরা ১০-২০ টাকা পর্যন্ত দাম দিয়ে কিনছি।”
এদিকে সাধারণ জনগণ বলেন, “এত কষ্ট করে পশু জবাই করলাম, কিন্তু চামড়ার ভালো দাম পাচ্ছি না। এই কম দামে চামড়া বিক্রি করে আমাদের কোনো লাভ হচ্ছে না। বরং পরিবেশ নোংরা হচ্ছে। গরুর চামড়ার দাম কিছুটা পাওয়া গেলেও ছাগলের চামড়ার দাম না পেয়ে আমরা তা ফেলে দিতে বাধ্য হচ্ছি। এতে আমাদের আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে এবং পরিবেশ দূষিত হচ্ছে।”
তাদের দাবি, আগামীতে ধামইরহাটে কোরবানি পশুর চামড়ার বাজারে সৃষ্ট সংকট দ্রুত সমাধান প্রয়োজন। সরকারি দাম অনুযায়ী চামড়ার সঠিক মূল্য নিশ্চিত করতে প্রশাসনকে কার্যকর ভূমিকা পালন করতে হবে। মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্ম্য রোধ এবং চামড়ার প্রক্রিয়াজাতকরণের আধুনিক সুবিধা বৃদ্ধি করা গেলে কোরবানি দাতা এবং ব্যবসায়ীরা উভয়ই উপকৃত হবেন।
মো: এ কে নোমান/এস আই আর