শনিবার, মে ১১, ২০২৪
spot_img

সেহরিতে বিপদেপড়া যাত্রীরাও শিকার হলো দোকানিদের “সিন্ডিকেটে”

সিয়াম রহমান, ঈশ্বরদী (পাবনা): পাবনার ঈশ্বরদীতে ২ ট্রেনের মুখোমুখি সংঘর্ষের ঘটনার পর থেকে ঢাকা-খুলনা রেল যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন অন্য ট্রেনের যাত্রীরা। রমজান মাসে নির্দিষ্ট সময়ে ঘরে পৌঁছে সেহরি করার কথা থাকলেও দুর্ঘটনার কারণে স্টেশনেই তিনগুন বেশি দামে খাবার কিনে সেহরি করেছেন তারা।

সরেজমিনে দেখা যায়, একটি ইঞ্জিন ও দুটি বগি লাইনচ্যুত হয়ে পড়ে আছে। ট্রেনের চাকা ভেঙে রেল লাইনের ওপর পড়ে আছে। ঈশ্বরদী-বানেশ্বর মহাসড়কের মধ্যবর্তী ঈশ্বরদী শহরের রেল গেটটি বন্ধ রয়েছে এ দুর্ঘটনার কারণে। ফলে রেলগেটের উভয়পাশে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। অন্যদিকে ট্রেন দুর্ঘটনার জন্য চিত্রা এক্সপ্রেস, সীমান্ত এক্সপ্রেসসহ বেশ কয়েকটি ট্রেন স্টেশনে দাঁড়িয়ে আছে। শতশত সাধারণ যাত্রীও ভোগান্তি পোহাচ্ছেন। সেহরির খাবারে সংকটে বেশি দাম দিয়ে খাবার কিনে খেতে হয়েছে তাদের।

যাত্রীদের অভিযোগ, রেল কর্তৃপক্ষের অবহেলায় ও অসচেতনতার কারণে যাত্রীদের এমন ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। উপায় না পেয়ে অতিরিক্ত টাকা দিয়ে খাবার ক্রয় করেই সেহরি খেতে হয়েছে।

রেল কর্তৃপক্ষকে দায়ী করে একাধিক যাত্রী বলেন, উদাসীনতা ও তদারকির অভাবেই এমন দুর্ঘটনা মাঝে মাঝেই ঘটছে। এতে করে সাধারণ মানুষদের ভোগান্তি আর শেষ হচ্ছে না।

সীমান্ত এক্সপ্রেসের যাত্রীর আশিক রানা, রাশেদুজ্জামানসহ কয়েকজনকে ট্রেনের ভেতরের ছিটে বসে সেহরি খেতে দেখা গেছে। এ সময় তারা বলেন, ঢাকা থেকে ৩ দিনের ছুটিতে আমরা কয়েকজন চুয়াডাঙ্গার গ্রামের বাড়িতে যাচ্ছিলাম। সিরাজগঞ্জ থেকে শুনি ঈশ্বরদীতে ট্রেন দুর্ঘটনা হয়েছে। এখানে এসে সেহরির সময় হয়। দোকানে গিয়ে দেখি খাবারের দাম তিনগুনেরও বেশি নিচ্ছে। দাম এতো কেন জানতে চাইলে দোকানিরা বলছেন, নিলে নেন না নিলে কেটে পড়েন। লোকের অভাব নেই। খাবারের কমতি তাই দাম বেশি নিচ্ছি। আসলে আমরা তো অসহায় হয়ে পড়েছি। বাধ্য হয়ে বেশি দাম হলেও খাবার কিনেছি।

চিত্রা এক্সপ্রেসের যাত্রী মহুয়া আক্তার মীম বলেন, ঢাকা থেকে যাত্রা শুরু করেছিলাম ভেবেছিলাম বাড়িতে গিয়ে সেহরি  খাব। কাছে তেমন টাকাও নেই। যে টাকা ছিল সেই টাকা দিয়ে খাবার কিনতে গিয়েছিলাম। গিয়ে দেখি দাম বেশি। অল্প করে খাবার কিনে সেহরি করলাম।

কাদের আলী (৫৫) নামে একজন বলেন, বুঝলাম ভুলবশত রেল দুর্ঘটনা ঘটেছে। এতে করে সাধারণ মানুষকে জিম্মি করে হোটেল ব্যবসায়ীরা একি শুরু করেছে। সেহরি খাওয়াকে পুঁজি করে তারা খাবারের দাম দ্বিগুণ থেকে তিনগুণ করেছে।

এ সময় শহিদুল ইসলাম নামে একজন বলেন, শতশত যাত্রী বিপদে রয়েছে। আর এখানকার হোটেল মালিকরা চড়া দামে খাবার বিক্রি করছে। বাধ্য হয়েই যাত্রীরা বেশি দামে খাবার কিনে সেহরি করেছে।

উল্লেখ্য, মঙ্গলবার (২৬ মার্চ) রাত পৌনে ১২টার দিকে পাবনার ঈশ্বরদীতে মালবাহী ও তেলবাহী দুই ট্রেনের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে একটি ইঞ্জিন ও দুটি বগির ৮ চাকা লাইনচ্যুত হয়। এ ঘটনায় ঢাকা-খুলনা রেল যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। তবে অন্য রুটে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোনো হতাহত হওয়ার খবর পাওয়া যায়নি। ঘটনাটি গভীরভাবে তদন্ত করতে ৪ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে আগামী ৩ কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। দুই ট্রেনের দুই চালকসহ তিনজনকে বরখাস্ত করা হয়েছে।

- Advertisement -spot_img

রাজনীতি

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

আবেদন করতে ব্যানারে ক্লিক করুন...spot_img

সর্বশেষ সব খবর