পঞ্চগড় প্রতিনিধি: পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলার ১ নং বাংলাবান্ধা ইউনিয়ন পরিষদ অচল হয়ে পড়েছে। শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর এই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক কুদরতি-খুদা-মিলন অফিসে না আসার কারণে এই অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছেন পরিষদের সদস্যরা। অনেক সদস্যও পরিষদে উপস্থিত থাকছেন না।
জানাগেছে ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ এনে গত দুই সপ্তাহ ধরে বিভিন্ন কর্মসূচী পালন করছে ইউনিয়নবাসী। রবিবার দুপুরে ইউনিয়নের সর্বস্তরের জনগণের আয়োজনে মানববন্ধন, বিক্ষোভ এবং জুতা মিছিল করেছে স্থানীয়রা।
এসময় তারা অভিযোগ করেন বাংলাবান্ধা ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক কুদরত-ই-খুদা মিলন জমি দখল, চাকুরি দেওয়ার নামে টাকা আতসাৎ ও বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরের কুলি শ্রমিকদের কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন। তেঁতুলিয়া, উপজেলার সিপাইপাড়া বাজারে বাংলাবান্ধা ইউনিয়ন পরিষদের সামনে বাংলাবান্ধা-ঢাকা মহাসড়কের পাশে দাঁড়িয়ে ঘন্টাব্যাপী এই মানববন্ধন, বিক্ষোভ জুতা মিছিল কর্মসূচী পালন করা হয়।
মানববন্ধনে ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করে বলেন, বাংলাবান্ধা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইউনিয়নে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছেন। অন্যায়ভাবে মানুষের জমি নিজে দাঁড়িয়ে থেকে দখল করেছেন। অনেককে চাকুরী দেয়ার নামে ও মানুষের জমি আরেকজনকে দখল করে দেয়ার নামে টাকা আত্মসাৎ করেছেন। তার দুর্নীতি চরম আকার ধারণ করেছে। তার বিরুদ্ধে কথা বলায় মাদক মামলা সহ নানা মামলা দিয়ে মানুষকে হয়রানি করেছেন। অনেকে তার রোষানলে পড়ে নিঃস্ব হয়েছেন। অবিলম্বে তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়ে দৃস্টান্তুমূলক শাস্তীর দাবি করেন বক্তারা। পরে ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে পঞ্চগড়-তেতঁলিয়া মহাসড়কে বিক্ষোভ জুতা মিছিল করেন স্থানীয়রা। তারা ২৪ ঘন্টার মধ্যে চেয়ারম্যানের পদত্যাগের দাবি জানান। বেঁধে দেয়া সময়ের মধ্যে পদত্যাগ না করলে সড়ক অবরোধ সহ কঠোর কর্মসূচী দেয়া হবে বলে হুসিয়ারী দেন তারা। এসময় বক্তব্য রাখেন আব্দুল হামিদ, রফিকুল ইসলাম, জফিরউদ্দিন প্রমুখ।
ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ডের সদস্য ইসরাইল হোসেন জানান, প্রায় একমাস থেকে চেয়ারম্যান পরিষদে আসছেন না। তার বিরুদ্ধে অসংখ্য অভিযোগ নিয়ে শত শত মানুষ পরিষদে আসছে। প্রতিদিনই মানববন্ধন বিক্ষোভ হচ্ছে। এ অবস্থায় ইউনিয়ন পরিষদে অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যহত হচ্ছে। সাধারন মানুষ সেবা পাচ্ছেনা। এ অবস্থ্য়া আামরা ইউএনওকে জানিয়েছি।
এ ব্যাপারে চেয়ারম্যান কুদরতি-খুদা-মিলনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
এর আগে এই চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে পঞ্চগড় জেলা শহরে মানববন্ধন করা হয়। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসকের কাছে স্বারকলিপিও দেয়া হয়। গত দুই সপ্তাহ ধরে বিক্ষোভ মানববন্ধন চলমান রয়েছে।
এদিকে গত ২৭ দিন থেকে ইউনিয়ন চেয়ারম্যান কুদরতি-খুদা-মিলন পরিষদে আসছেন না। এতে স্বাভাবিক কর্যক্রম অচল হয়ে পড়েছে। আমরা গণাভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত চলছে। উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলেছি। তবে সরকারের সুর্নিদিষ্ট নির্দেশনা আছে কোন চেয়ারম্যান পরিষদে উপস্থিত না হলে প্যানেল চেয়ারম্যান, চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করবেন।
মেহেদী হাসান মিরাজ/এস আই আর