রাবি প্রতিনিধি: তীব্র গরম, বৃষ্টি উপেক্ষা করে কোটা পদ্ধতি সংস্কারের দাবিতে ফের বিক্ষোভ মিছিল করেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থীরা। শনিবার (৬ জুলাই) সকাল সাড়ে নয়টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোডে অবস্থান নিতে শুরু করেন শিক্ষার্থীরা।
এরপর বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোড থেকে মিছিল নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকের সামনে ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়ক অবরোধ করেন তাঁরা। পরে দুপুর বারোটায় কাজলা গেট হয়ে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করেন শিক্ষার্থীরা। এরপর প্যারিস রোডে অবস্থান করে কোটার প্রতিবাদে একটি পথ নাটক উপস্থাপন করেন আন্দোলনকারীরা।
এসময় আন্দোলনকারীরা, ‘আমার সোনার বাংলায়, কোটা প্রথার ঠাঁই নাই’, ‘জেগেছে রে জেগেছে, ছাত্র সমাজ জেগেছে ‘, ‘সারা বাংলায় খবর দে, কোটা প্রথার কবর দে’, ‘কোটা প্রথার বিরুদ্ধে, লড়াই করো একসাথে’, ‘দেশটা নয় পাকিস্তান, কোটার হবে অবসান ইত্যাদি স্লোগানে আন্দোলন মুখরিত করেন।
আন্দোলনে তাঁরা চারটি দাবি উত্থাপন করেন এবং সেই সাথে হাইকোর্টের আদেশে ২০১৮ সালের পরিপত্র বাতিল হওয়াকে বর্তমান সরকারের ব্যর্থতা বলে উল্লেখ করেন। চারটি দাবি হলো- সকল কোটা ১০ শতাংশের নিচে কমিয়ে আনতে হবে; একজন কোটা সুবিধা ভোগ কারী তাঁর জীবদ্দশায় একমাত্র মাত্র কোটা সুবিধা নিতে পারবে, এতে বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তিও অন্তর্ভুক্ত থাকবে। প্রতি দশ বছর পর পর জনশুমারিতে অর্থনৈতিক সমীক্ষা করতে হবে এবং এই সমীক্ষার মাধ্যমে কোটার যৌক্তিকতা মূল্যায়ন করা। নিরপেক্ষ ও মেধাভিত্তিক আমলাতন্ত্র নিশ্চিত করতে কার্যকর ব্যবস্থা করা।
আন্দোলনের মূখপাত্র পপুলেশন সায়েন্স অ্যান্ড হিউম্যান রিসোর্স ডেভেলপমেন্ট বিভাগের শিক্ষার্থী আমানুল্লাহ খান বলেন, আমরা অনেক সময় দেখি বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আত্মহত্যা করে। আমরা বলতে চাই নির্বাহী বিভাগ ও বিচার বিভাগ আপনারা শিক্ষার্থীদের সাথে কানামাছি খেলবেন না। আপনারা ২০১৮ সালে এমন পরিপত্র কেন জারি করলেন যা বিচার বিভাগে টিকল না। এইটা আওয়ামী লীগ সরকারের ব্যর্থতা। ২০১৮ সালের পরিপত্র বাতিল হলে সবার আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ব্যর্থতা প্রমান করে।
এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সাবরিনা ইসলাম মিথিলা বলেন, প্রথমত, ২০১৮ সালের পরিপত্র বহাল সাপেক্ষে কমিশন গঠন করে সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতির সংস্কার। দ্বিতীয়ত, ব্যাক্তি তার জীবদ্দশায় সর্বোচ্চ একবার কোটা ব্যাবহার করতে পারবে। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষাও অন্তর্ভুক্ত থাকবে। তৃতীয়ত, প্রতি জনশুমারির সাথে অর্থনৈতিক সমীক্ষার মাধ্যমে বিদ্যমান কোটার পুনর্মুল্যায়ন নিশ্চিত করতে হবে। আমরা আমাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত রাজপথ থেকে সরছি না। আমরা চাই সমতা ও বৈষম্যবিহীন সমাজ।
প্রসঙ্গত, এই বিক্ষোভ কর্মসূচিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের প্রায় দুই সহস্রাধিক শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন। এর আগে গত ৬ জুন , ৩০জুন, পহেলা জুলাই ও ৪ জুলাই মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়।
মাফুজুর রহমান ইমন/এস আই আর