নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি: জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সীমানা প্রাচীর নির্মাণ প্রকল্প বারবার বাধাগ্রস্ত হচ্ছে স্থানীয়দের বিরোধিতার কারণে। নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এ প্রাচীর নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হলেও স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি ও প্রশাসনিক জটিলতায় কাজ এখনো সম্পূর্ণ হয়নি।
২০২২ সালের ৩১ মার্চ তৎকালীন উপাচার্য ড. সৌমিত্র শেখর ১৫০০ মিটার দীর্ঘ সীমানা প্রাচীর নির্মাণের কাজ শুরু করেন, যার ব্যয় ধরা হয়েছিল ২ কোটি ৩৩ লাখ টাকা। তবে ২০২৩ সালের মার্চে কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও তা এখনো অসমাপ্ত।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অংশে প্রাচীর নির্মাণের কাজ শেষ হলেও গত জুলাই গণ অভ্যুত্থান এবং ৫ই আগস্টের পর স্থানীয়রা নতুন বিজ্ঞান ভবন, চুরুলিয়া মঞ্চ, বটতলা, বঙ্গমাতা হল সংলগ্ন দেয়ালসহ বিভিন্ন অংশ ভেঙে ফেলেন। এ ছাড়া পশ্চিম পাশের জঙ্গলবাড়ি, নিমাইসিটি এবং পূর্বে চারুদ্বীপ সংলগ্ন এলাকায় প্রাচীরের কাজ নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, প্রাচীর নির্মাণ হলে তাদের চলাচলের পথ বন্ধ হয়ে যাবে। এক মেস মালিক আব্দুল হান্নান বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয় হওয়ার আগেই এখানে রাস্তা ছিলো। হঠাৎ করে তা বন্ধ করে দিলে আমাদের সমস্যা হবে। অন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও ক্যান্টনমেন্টেও একাধিক রাস্তা খোলা রাখা হয়।”
অন্যদিকে, শিক্ষার্থীদের অধিকাংশ মনে করেন, অসম্পূর্ণ প্রাচীরের কারণে তারা নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছেন। একাধিকবার দেয়াল মেরামতের দাবি জানালেও এখনো কোনো সমাধান আসেনি। তবে প্রাচীরের কাছে থাকা মেসের শিক্ষার্থীরা চলাচলের পথ খোলা রাখার পক্ষে মত দিয়েছেন।
তবে স্থানীয়দের পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরের কিছু শিক্ষক, কর্মকর্তার বিরুদ্ধেও স্বার্থ সংশ্লিষ্ট অভিযোগ উঠেছে, যারা প্রাচীর নির্মাণে বাধা দিচ্ছেন বলে জানা গেছে।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সম্প্রতি এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, চলতি বছরের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে প্রাচীর নির্মাণ সম্পন্ন করা হবে। ২০২৫ সালের ১ জানুয়ারি থেকে শুধুমাত্র প্রধান দুটি গেট দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ ও বাহিরের অনুমতি থাকবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, “সীমানা প্রাচীরের অসম্পূর্ণ কাজ দ্রুত শেষ করা হবে এবং সকল অননুমোদিত প্রবেশপথ বন্ধ করে দেওয়া হবে।”
উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, “নিরাপত্তার স্বার্থে কোনো পকেট গেট খোলা রাখা সম্ভব নয়। ভাঙা দেয়ালগুলো দ্রুত মেরামত করা হবে।”
মো. সাইফুল ইসলাম/এমএ