মোঃ সোহাগ আরেফিন, গুরুদাসপুর (নাটোর): নাটোরের গুরুদাসপুরে এনজিও ঋণ আর সুদেকারবারিদের চাপে বৃদ্ধ আলম শেখ (৬৫) ও তার স্ত্রী নাজমা বেগম (৫০) একসাথে বিষপান করে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন।
বুধবার (৮ মে) সকাল সাড়ে ৯ টায় মুমূর্ষ অবস্থায় তাদের উদ্ধার করে গুরুদাসপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। বৃদ্ধ আলম শেখ উপজেলার বিয়াঘাট ইউনিয়নের হামলাইকোল গ্রামের বাসিন্দা। নিজের বাড়িতেই তারা বিষপান করেছিলেন।
গুরুদাসপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগের চিকিৎসক স্নিগ্ধা আক্তার জানান- জমিতে ব্যবহার করা কীটনাশক পান করে হাসপাতালে এসেছিলেন বৃদ্ধ দম্পতি। বিষ তোলার পর চিকিৎসা দিয়ে হাসপাতালে ভর্তি রাখা হয়েছে স্বামী-স্ত্রীকে। তবে অবস্থা গুরুতর হওয়ায় নাজমা বেগমকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
অসুস্থ্য থাকায় সংবাদকর্মীদের সাথে কথা বলতে পারেননি স্বামী-স্ত্রী। তবে মেয়ে আলপনা আক্তার বলেন- বছর দেড়েক আগে বাড়ির ভিটাসহ দেড় বিঘা জমি তার ভাই সবুজ হোসেনের নামে লিখে দেন বাবা আলম শেখ। শর্ত ছিল তিনটি এনজিও ও সুদে কারবারিদের কাছ থেকে নেওয়া ৫ লাখ টাকার ঋণ পরিশোধ করবেন সবুজ। কিন্তু সবুজ ঋণের একটি টাকাও শোধ করেননি। উপরন্ত সবুজের স্ত্রী তার পিতা-মাতার সাথে দুর্ব্যবহার করেন। সবশেষ মঙ্গলবার কিস্তির টাকার জন্য আশা এনজিওরকর্মীরা বাড়িতে গিয়ে চাপ দেন। পারিবারিক কলহ আর ঋণের চাপে বুধবার সকালে ঘরের ভেতর পিতা-মাতা একসাথেই বিষপান করে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন।
পিতা-মাতার বিষপানে আত্মহত্যার বিষয়ে ছেলে সবুজ বলেন- ৬৬ শতাংশ জমি তিনি তার পিতার কাছ থেকে নগদ ৫ লাখ টাকায় কিনেছেন। এখনো তার আয়েই পিতা-মাতার ভরণপোষণ চলে। মূলত এনজিওর ২ লাখ ও সুদের ৩ লাখ টাকা পরিশোধ করতে না পেরে পাওনাদারদের চাপে বিষপানে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন তার পিতা মাতা।