সোমবার, মে ২০, ২০২৪
spot_img

রাবিতে আবারও ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীকে হল থেকে নামিয়ে দেওয়ার অভিযোগ

মাফুজুর রহমান ইমন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের হল শাখা ছাত্রলীগের এক নেতার বিরুদ্ধে হলের আসন থেকে এক শিক্ষার্থীর বিছানাপত্র নামিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

গতকাল মঙ্গলবার (১৬ জানুয়ারি) রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ হবিবুর রহমান হলের ১৩০ নম্বর কক্ষে এ ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী আজ বুধবার বেলা ৩ টার দিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার নামক গ্রুপে একটি পোস্টে এই অভিযোগ করেন। ভুক্তভোগী রাকিবুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাব বিজ্ঞান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে হল থেকে আবাসিক শিক্ষার্থীদের বের করে দেওয়ার ঘটনা যেন থামছেই না। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হল থেকে অহরহ আবাসিক শিক্ষার্থীদের বের করে দেওয়ার মতো ঘটনা ঘটছে। প্রতিবারই অভিযোগের তীর ছাত্রলীগ নেতাদের বিরুদ্ধে।

এবার রাবির শহীদ হবিবুর রহমান হলের এক আবাসিক ছাত্রকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে হল শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও ইতিহাস বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সোহান হাসান এর বিরুদ্ধে । তিনি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুল্লা-হিল-গালিবের অনুসারী।

হল থেকে বের করে দেয়া ছাত্রের আসবাব পত্র

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী ফেসবুকে লিখেছেন, ‘আমি নিরুপায় এক সাধারণ শিক্ষার্থী বলছি। আর্থিক সমস্যার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়মিত পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়া নিয়ে খুবই শঙ্কায় আছি। অর্থসংকটে আমি বিভাগে এক বছর পিছিয়ে গেছি। মেসে থেকে পড়াশোনা চালাতে না পেরে হলে সিটের জন্য প্রাধ্যক্ষকে প্রায় ৬ মাস ধরে বলে আসছি। অবশেষে আমি গত ১০ জানুয়ারি শহীদ হবিবুর রহমান হলের ১৩০ নম্বর রুমে বরাদ্দ পাই। আমি ৯ জানুয়ারি হতে উক্ত রুমে অবস্থান করি। গতকাল রাত সাড়ে ৮টায় আমি খাবার খাওয়ার জন্য বাহিরে যাই। রুমে ফেরার পর আমি দেখি ছাত্রলীগ নেতা সোহান (২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষ) আমার প্রয়োজনীয় সব জিনিস বেড থেকে ফেলে দেয় এবং তাদের পছন্দ মত একজন শিক্ষার্থীকে ১৩০ রুমের আমার বেডে তুলে দেয়। আমি যখন রুমে ফিরি, রাত ১১ টা ৪০ মিনিটে তখন আমাকে জোর পূর্বক এই রাতে অন্য কোথাও আশ্রয় নিতে বলে। তখন নিরুপায় হয়ে প্রাধ্যক্ষকে ফোন দিলেও তিনি ধরেন নি।’

তিনি আরও লিখেছেন, ‘বিষয়টি আজ সকালে প্রাধ্যক্ষকে জানালে তিনি বলেন, আমার দায়িত্ব সিটে তুলে দেওয়া, সিটে থাকতে পারবে কিনা সেই দায়ভার আমার না। এখন তোমার কোন বড় ভাইয়ের সাপোর্ট নিয়ে সিটে থাকো। সিট দেয়ার দায়িত্ব আমার, সিট রক্ষার দায়িত্ব তোমার।’ ছাত্রলীগ আসন ছাড়তে চাপ দিচ্ছে উল্লেখ করে এই শিক্ষার্থী লিখেছেন,‘আমি আমার নিজস্ব সিটে নিরাপদে থাকতে চেয়ে একটি অভিযোগপত্র লিখি এবং প্রাধ্যক্ষকে দেয়। তিনি দেখবেন বলে জানান। কিন্তু আমার সিট এখনো দখল। আমার বেড মেঝেতে, এই শীতে আমি কি করব বুঝতেছিনা। ছাত্রলীগ আমাকে সিট ছাড়তে চাপ দিচ্ছে। সার্বিক বিষয় নিয়ে আমি খুবই ভীতসন্ত্রস্ত। আমি আমার বৈধ সিটে নিরাপদে থেকে পড়াশোনা চালিয়ো যেতে চাই।’

এ ব্যাপারে জানতে অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা সোহান হাসানের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি সাড়া দেননি। পরে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুল্লা-হিল-গালিব বলেন, ‘হল থেকে কোনো আবাসিক শিক্ষার্থীকে নামিয়ে দেওয়ার এখতিয়ার ছাত্রলীগের নেই। তা এ ঘটনা জানার সঙ্গে সঙ্গে আমি সোহানকে (অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা) ডেকেছি এবং জানতে চেয়েছি সে এটা কেন করেছে। এরপর আমি ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীকে তার সিটেই তুলে দিয়ে বিষয়টি সমাধান করে দিয়েছি।’

হল প্রাধ্যক্ষর বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীর অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে প্রাধ্যক্ষ শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘কয়েকদিন আগে ওই শিক্ষার্থীকে হলের সিট ফাঁকা থাকা সাপেক্ষে আবাসিকতা দিয়েছি। দুই-তিন আগে জানতে পারি, ১৩০ নম্বর কক্ষে একটি আসন খালি হবে। পরে ওই শিক্ষার্থী ওই কক্ষের আবাসিকতার জন্য আসেন। এর আগে ছাত্রলীগের পক্ষ থেকেও ওই কক্ষে একজন উঠবে বলে জানিয়েছিল। পরে ওই শিক্ষার্থীকে জিজ্ঞেস করি, তুমি থাকতে পারবে কি না? ওই শিক্ষার্থী থাকতে পারবে বলে জানায়। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী আমার বিরুদ্ধে যেভাবে অভিযোগ করেছেন, আসলে আমি সেভাবে বলিনি। বিষয়টি সমাধান করা দিয়েছি। আর সমস্যা হবে না।’

আর আই এন

- Advertisement -spot_img

রাজনীতি

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

আবেদন করতে ব্যানারে ক্লিক করুন...spot_img

সর্বশেষ সব খবর