মাফুজুর রহমান ইমন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি (রাবিসাস) ৫৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে (প্রতিভাস) ম্যাগাজিনের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ শনিবার (২০ জানুয়ারী ) বেলা ১১.৩০ মিনিটে রাবিসাসের কার্যালয়ে অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়।
রাজশহী বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সভাপতি তৌসিফ কাইয়ুমের সভাপতিত্বে, প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক, বিশিষ্ট নাট্যজন ও রাবিসাসের সাবেক সভাপতি মলয় কুমার ভৌমিক। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন ব্যুরো প্রধার দৈনিক খবরের কাগজ ও রাবিসাসের সাবেক সভাপতি এনায়েত করিম, এবং ব্যুরো প্রধান দৈনিক কালবেলা ও রাবিসাসের সাবেক সহ-সভাপতি আমজাদ হোসেন শিমুল।
মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি অধ্যাপক মলয় কুমার ভৌমিক বলেন, ‘রাবি সাংবাদিক সমিতি একটি স্বাধীনচেতা প্রতিষ্ঠান। সূচনালগ্ন থেকে নানা কঠিন পথ মাড়িয়ে আমরা বর্তমান সময়ে পৌঁছেছি। দেশপ্রেমিক হওয়ার মাধ্যমে ক্যাম্পাসে আমরা বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনের জন্য আগ্রহী ছিলাম। আর্থিকভাবে সমস্যায় থাকলেও কখনো আমরা নিজেদের নৈতিকতাকে বিসর্জন দিতাম না। বর্তমান সময়ে সাংবাদিকতা করে অনেকে নিজেকে জাহির করতে চায়। অথচ তাদের উচিত অসাধারণ হয়ে সবার মাঝে সাধারণ হয়ে থাকা। সাংবাদিকতা করার মাধ্যমে একজন ব্যক্তি নানা বিষয়ে পারদর্শিতা অর্জন করতে পারে।’
একুশ শতকের পূর্ববর্তী ও পরবর্তীকালে দেশের গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানের অবস্থা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘‘আমাদের সময় ইলেকট্রনিক মিডিয়া ছিল না, শুধু প্রিন্ট মিডিয়া ছিল, তাও হাতে গোনা কয়েকটা। ফলে আমাদের নিউজ সহজেই সবার চোখে পড়ত এবং অনেক চাপ সামলাতে হত। এখন তো সেই ধাক্কাটা কমে গেছে। অসংখ্য নামি-বেনামি প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়া হওয়ার কারণে কোথায় কী ছাপা হচ্ছে সেটা কেউ আর দেখছে না। আজকে মিডিয়াকে একটি ‘আয়ের উৎস’ হিসেবে পরিণত করা হচ্ছে। কিন্তু সেই সময়ের সমস্ত পত্রিকাই লোকসানে চলত। তাদের উদ্দেশ্য ছিল মানুষকে সত্য জানানো ও দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া।’
বিশিষ্ট এ নাট্যজন আরও বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সম্পর্ক হলো সিনিয়র-জুনিয়র সহকর্মী। কিন্ত এখন সেই ধারণাটা নেই। শিক্ষকরা এখন ক্লাস নিয়েই চলে যান। অথবা শিক্ষার্থীরা ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকে কিন্তু তাদের ‘১০ মিনিট পর আসো’ এটা বলার সময় নাই। এখন বিশ্ববিদ্যালয়গুলো কোচিং সেন্টারে পরিণত হচ্ছে।’
এছাড়া প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান, মহান মুক্তিযুদ্ধ এবং স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে রাবি সাংবাদিক সমিতির সদস্যদের ভূমিকা, সংগঠনটির ইতিহাস ও ঐতিহ্য নিয়ে তিনি আলোচনা করেন।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এনায়েত করিম বলেন, রাবিসাস নানা কারণে বন্ধ হয়েছে কিন্তু অনেক ঘাত প্রতিঘাত ও প্রতিকূলতা পেরিয়ে রাবিসাস এখানে এসেছে। রাবিসাস ১৯৬৯ গনঅভ্যুত্থান ও ১৯৭১ সালের মহান মুক্তি যুদ্ধে অনেক ভুমিকা পালন করেছে। শুধু পড়াশোনয় সীমাবদ্ধ না থেকে সাংবাদিকতা চর্চা করলে সৃজনশীলতার বিকাশ ঘটে। এবং এখান থেকে জ্ঞান অর্জন করেই সাংবাদিকরা দেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় নেতৃত্ব দিচ্ছে।
রাবিসাসের সভাপতি তৌসিফ কাইয়ুম উপস্থিত সকলকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন,রাবিসাসের সকল সদস্যদের অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলে আজকে আমরা এই ম্যগাজিনটি প্রকাশ করতে পেরেছি
অনুষ্ঠানে রাবিসাসের সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সবুর লোটাসের সঞ্চালনায় আরও উপস্থিত ছিলেন সমিতির সহ-সভাপতি সাইফুর রহমান ও নোমান ইমতিয়াজ, কোষাধ্যক্ষ রিপন চন্দ্র রায়, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সোহানুর রহমান রাফি, সাংগঠনিক সম্পাদক আসিফ আজাদ সিয়াম এবং দপ্তর সম্পাদক ইরফান তামিমসহ অন্যান্য সদস্যবৃন্দ।