সোমবার, মার্চ ২৪, ২০২৫
spot_img

মুগ্ধ করছে সোনালুর সৌন্দর্য

চারিদিকে চলছে গ্রীষ্মের তাপদাহ। বৈশাখের উত্তপ্ত রোদ আর রুক্ষ আবহাওয়ায় টালমাটাল জনজীবন। প্রক‌তির এই রুক্ষতাকে উপেক্ষা করে সবুজ পাতা ছাপিয়ে সোনালি রঙের ফুলে সেজেছে সোনালু গাছ। দিনাজপুরের হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (হাবিপ্রবি) প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থিত সোনালু ফুলের গাছটি হলুদরাঙা সৌন্দর্যে মাতোয়ারা করে রাখছে চারপাশের পরিবেশ।

শুধু বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রশাসনিক ভবনের সামনে নয়। সোনালুর গাছ রয়েছে বোটানিক্যাল গার্ডেনসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য স্থানেও।

সোনালু ফুলের পাঁপড়ি পাঁচটি। মাঝে পরাগ দন্ড অবস্থিত। পাতা হাল্কা সবুজাভ, মধ্য শিরা স্পষ্ট। গাছের শাখা-প্রশাখা কম, সোজা ভাবে উপরের দিকে বাড়তে থাকে, বাকল সবুজাব থেকে ধূসর রঙের, কাঠ মাঝারি শক্ত মানের হয়। ফুল থেকে গাছে ফল হয়, ফলের আকার দেখতে সজিনা সবজির আকৃতির, তবে সজিনার গায়ের চামড়াতে ঢেউতোলা সোনালু ফলে তা নেই ,চামড়া মসৃণ। পত্র ঝরা অবস্থায় এই ফুলের সৌন্দর্যকে চেরি ফুলের সাথে তুলনা করা যায়।

বাংলাদেশের প্রকৃতি প্রতিটি ঋতুতেই আপন সৌন্দর্য ও মহিমায় প্রস্ফুটিত হয়। অনন্য সৌন্দর্য আর মায়া দিয়ে আকর্ষণ করে ক্যাম্পাসের প্রতিটি প্রকৃতিপ্রেমী কোমল হৃদয়কে। খরতাপে মাঝে চলতি পথে প্রতিটি শিক্ষার্থীর নজর কাড়ছে এই সোনালু ফুল। প্রতিটি গাছের গা থেকে যেনো বেয়ে পড়ছে হলুদ আভার নির্ঝর। বৈশাখের তপ্ত বাতাসে যখন দুলছে গাছের একেকটি কান্ড তখন প্রশান্তির দোলা দিয়ে যাচ্ছে প্রতিটি শিক্ষার্থীর হৃদয়কে। ক্যাম্পাসের তরুণ – তরুনীরা নিজেদের অবসর সময়ে বন্ধুদের সাথে এসে নিজেদেরকে ক্যামেরা বন্দি করতে ভুলেনি,যা শোভা পাচ্ছে নিজেদের ফেসবুকের স্টোরিতে। প্রেয়সীর আবদার মেটাতে ক্যামেরার পিছনে শশব্যস্ত দেখা যাচ্ছে প্রেমিকদের। শুধু কী শিক্ষার্থীরাই,সোনালু ফুলের মনোমুগ্ধকর আলিঙ্গন করতে দেখা যায় বিভিন্ন প্রজাতির পাখি ও ভ্রমরদের।

বাহারি সৌন্দর্যের ন্যায় এর রয়েছে বাহারি নাম। এর সংস্কৃত নামগুলো হলো আরগ্বধ, অমলতাস, আরোগ্যশিম্বী, কুণ্ডল, কৃতমালক, কর্ণিকার, কর্ণী, কলিঘাত, চতুরঙ্গুল, দীর্ঘফল, নৃপদ্রুম, প্রগ্রহ, ব্যাধিঘাত, রাজবৃক্ষ, শম্পাক, স্বর্ণাঙ্গ, হেমপুষ্প। এ ফুলের বৈজ্ঞানিক নাম Cassia fistula এবং Albizia inundata। উদ্ভিদের শ্রেণিবিন্যাসে Fabaceae গোত্রের এ বৃক্ষের ফল লম্বাটে। সোনালি রঙের ফুলের বাহার থেকেই ‘সোনালু’ নামে নামকরণ। ইংরেজি ভাষায় একে বলা হয় golden shower, Purging Cassia, Indian Laburnum বা Pudding-Pipe Tree। তবে যে নামেই ডাকা হোক না কেন, কাঁচা সোনার মতো যার রং তাকে সোনালু নামে ডাকলেই যেন বেশি তৃপ্তি পাওয়া যায়।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরসহ অনেক কবির কবিতায় পাওয়া যায় সোনালু ফুলের নাম। শুধু সৌন্দর্য বর্ধনই নয়, এর রয়েছে নানাবিধ ঔষধি গুনাগুণ।

কামরুল হাসান
ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগ
হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়

- Advertisement -spot_img

রাজনীতি

আবেদন করতে ব্যানারে ক্লিক করুন...spot_img

সর্বশেষ সব খবর